এসইও কাজে ব্যাকলিংক কেন প্রয়োজন হয়?

এসইও কাজের জন্য ব্যাকলিংক প্রয়োজন অনস্বীকার্য। ব্যাকলিংক কেন প্রয়োজন তার উপরেই আজকের আলোচনা।

কোন ওয়েবসাইটে লিংক সেটি হতে পারে সেই সাইটের ইন্টারনাল লিংক বা এক্সটারনাল লিংক। এক্সটারনাল লিংকটিকে ব্যাকলিংক বলা যেতে পারে ঐ সাইটের জন্য যেটি হবে সেই লিংক এর টার্গেট সাইট।

ব্যাকলিংক এসইও রকেটের জ্বালানির মত গুরত্বপূর্ণ একটি ইস্যু।

কারণ, আপনার সাইটে ভাল কনটেন্ট পাবলিশ করার সাথে সাথে মনে রাখতে হবে, ব্যাকলিংক হলো সার্চ ইঞ্জিনে পজিশন পাওয়ার জন্য অন্যতম গুরত্বপূর্ণ একটি বিষয়। যা অসংখ্য পরীক্ষা দ্বারা প্রমানিত। গুগল বহুবার বলেছে ব্যাকলিংক তাদের এলগরিদম এর একটি সত্যিকারের সিগনাল।

কিন্তু তার আগে ব্যাকলিংক তৈরির জন্য অর্থ এবং সময় বিনিয়োগ করার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে, এই ব্যাকলিংক কেন গুরত্বপূর্ণ।

আলোচ্য পোষ্টে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

তবে, একটি বিষয় না বললেই নয়, প্রথম দিকে গুগলের র‌্যাংকিং এলগরিদম ব্যাকলিংক এর সংখ্যার উপর নির্ভর করত। তখন যে ওয়বসাইটের ব্যাকলিংক যত বেশী হতো সেটি গুগলে র‌্যাংক করার তত বেশী উপযোগী হতো।

এর জন্য কিভাবে ব্যাকলিংক এর সংখ্যা বাড়ানো যায় তা নিয়ে সবাই এক অসম প্রতিযোগীতায় লিপ্ত হয়ে গিয়েছিল। এই প্রতিযোগীতায় অংশ নিয়ে ব্যাকলিংক তৈরির সময় তারা এর মান নিয়ে ততটা ভাবত না। কোন রকমে হলেই হলো।

কিন্তু, বর্তমানে পরিস্থিতি আর তেমনটা নয়। এই বাস্তবতার নিরিখে গুগল ব্যাকলিংক বিষয়ে তার এলগরিদম আপডেট করেছে। যার ফলে সার্চ ইঞ্জিনে আপনার সাইট র‌্যাংকিং এর জন্য এখন আর ব্যাকলিংক সংখ্যাটি গুরত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসাবে পূর্বের ন্যায় কাজ করছে না।

এখন মুখ্য বিষয় হলো যে ব্যাকলিংক তৈরি করা হচ্ছে তা মান সম্পন্ন এবং ওয়েবসাইট কনটেন্ট এর সাথে প্রাসঙ্গিক কিনা।

কাজেই, ব্যাকলিংক বলতে তাকেই কে বুঝানো হবে যা কেবল ভালো মানের ব্যাকলিংক। আর, সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাংকিং এর জন্য সেই মান সম্পন্ন ব্যাকলিংক প্রকৃতপক্ষে কতটা গুরত্বপূর্ণ তা নিয়েই কথা বলা হবে।

তবে, এই আলোচনা বুঝার জন্য ব্যাকলিংক সম্পর্কে একটি প্রাথমিক ধারণা থাকা প্রয়োজন যা আমি অপর এক পোষ্টে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আপনি যদি বিষয়টির উপর একেবারেই নতুন হয়ে থাকেন তাহলে সেই পোষ্টটি দেখে আসতে পারেন।

ব্যাকলিংক কেন প্রয়োজন

উপরের আলোচনা থেকে পরিস্কার হয় যে এসইও কাজের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করা গুরত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তবে তা হতে হবে মান সম্পন্ন।

ব্যাকলিংক এমন একটি বিষয় যার মাধ্যমে অন্য কোন ওয়েবসাইট আপনাকে সত্যায়ন করবে। মানসম্পন্ন ব্যাকলিংক বলতে বুঝায় যে ওয়েবসাইট আপনাকে ভোট দিবে বা সত্যায়ন করবে তা যেন কোন স্প্যামি সাইট না হয়। তাকে হতে হবে, আপনার সাইটের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং অথারিটি ওয়েবসাইট। অথারিটি ওয়েবসাইট বলতে বুঝায় যা ইতোমধ্যে সার্চ ইঞ্জিনের নিকট বিশ্বাসযোগ্য হিসাবে পরিচিত বা পরীক্ষিত।

এক কথায় বলতে গেলে, আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাংক করানোর জন্য এটি কাজে আসে।

ব্যাকলিংক কেন গুরত্বপূর্ণ বা ব্যাকলিংক কেন তৈরি করা প্রয়োজন তার স্বপক্ষে কিছু তথ্য নিচে উপস্থাপন করছি-

সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাংকিং এর জন্য

ধরুন, আপনার সাইট স্বাস্থ্য সম্পর্কিয় একটি ব্লগ। যেখানে আপনি স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন টপিকস এর উপর আর্টিকেল লিখে চলছেন। যদি, স্বাস্থ্য বিষয়ে আপনার টপিকস এর কিওয়ার্ডের প্রতিযোগীতা বেশী থাকে অর্থাৎ অনেক ব্লগার এরই মধ্যে একই টপিকস এর অনেক ব্লগ পোষ্ট পাবলিশ করে থাকে, তাহলে ঐ কিওয়ার্ড সম্বলিত টপিকসটি হবে প্রতিযোগীতাপূর্ণ।

যার ফলে, ভাল কনটেন্ট রচনা করা সত্ত্বেও সার্চ ইঞ্চিনে তাকে র‌্যাংক করানো কষ্টসাধ্য বিষয় হবে দাড়াবে। একটি কনটেন্ট বা আর্টিকেল লিখা অনেক কষ্টের কাজ। অনেক কষ্ট করে আপনার লেখা আর্টিকেলটি যদি আপনার অডিয়েন্সের কাছে নাই পৌঁছে, তাহলে সেটি আরোও বড় কষ্টের।

আর আপনার এই কষ্ট লাঘবের জন্যই ভূমিকা পালন করবে ব্যাকলিংক যদি সেটি হয় মানসম্পন্ন। কারণ, আপনার লেখা আর্টিকেল এর কিওয়ার্ড এর প্রতিযোগীতা বেশী হওয়ার কারণে এই ব্যাকলিংক তখন সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাংকিং এর জন্য গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

ডোমেইন অথারিটি বৃদ্ধির জন্য

দশ বছর আগেও কোন ওয়েবসাইট এর বিশ্বাসযোগ্যতা নির্ণয়ের মাপকাঠি ছিল তার প্যাজ র‌্যাংক যা গুগল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ছিল। কিন্তু এখন তা বদলে গিয়ে হয়েছে ডোমেইন অথারিটি।

যে ওয়েবসাইটের ডোমেইন অথারিটি যত বেশী হবে, সেটি সার্চ ইঞ্জিনের নিকট তত বেশী অথারিটি বা নির্ভরযোগ্য সাইট হিসাবে বিবেচিত হবে এবং সেটি তুলনামুলক সহজে সার্চ ইঞ্জিনে র‌্যাংক করবে।

আপনি আপনার সাইটের ডোমেইন অথারিটি বাড়াতে চাইলে ভালো মানের ব্যাকলিংক তৈরির কোন বিকল্প নেই। ডোমেইন অথারিটি ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত হয়ে থাকে।

ট্রাফিক বৃদ্ধির জন্য

আপনি যদি আপনার সাইটের কনটেন্টর এর সাথে মিলে যায় এমন কোন হাই অথারিটি ওয়েবসাইটে কনটেক্সচুয়াল ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারেন তাহলে সেখান থেকে আপনার সাইটে ট্রাফিক আসবে যাকে রেফারেল ট্রাফিক বলা হয়।

এছাড়া, ভালোমানের ব্যাকলিংক তৈরির ফলে যদি আপনার আর্টিকেল গুগলের প্রথম পেজ এ র‌্যাংক করে ফেলে তাহলে তো কোন কথাই নেই। প্রচুর পরিমানে তখন অরগানিক ট্রাফিক আসা শুরু হবে।

কাজেই, বুঝতেই পারছেন, কোন সাইটে ট্রাফিক আনায়নের কাজে ব্যাকলিংক কতটা গুরত্বপূর্ণ।

বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরির জন্য

আপনার ব্লগ সাইটটি যদি নতুন হয়ে থাকে তাহলে দেখা যাবে গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন প্রথম প্রথম তাকে ইনডেক্স করবে না। আর্টিকেল লিখেই যাবেন মাসের পর মাস কিন্তু তা গুগল তাতে দৃষ্টি দেবে না।

সেক্ষেত্রে, আপনি যদি কোন অথারিটি সাইট থেকে ভালো মানের কয়েকটি ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারেন, তাহলে দেখবেন পরিস্থিতি যেন পুরোটাই বদলে গেল। অর্থাৎ, তখন আপনার সাইটের কনটেন্ট খুব দ্রুত ইনডেক্স হওয়া শুরু করবে।

আর এই ইনডেক্স এর কাজ শুরু হওয়া মানেই আপনার সাইট গুগলের নিকট বিশ্বাসযোগ্যতা পেয়ে গেছে। কিভাবে? ঐ হাই অথারিটি সাইট থেকে ব্যাকলিংক পাওয়ার ফলে।

ব্র্যান্ড এওয়ারনেস ও নতুন কাস্টোমার তৈরিতে

আপনার যদি ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে ওয়েবসাইট তৈরি করেন যার উদ্দেশ্য হলো পণ্য বা সেবার টার্গেট অডিয়েন্সের নিকট প্রচার করা; তাহলে ব্যাকলিংক তৈরির মাধ্যমে আপনার সেই উদ্দেশ্য পুরণ হতে পারে। এতে করে, অডিয়েন্সের মাঝে আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে একটি ধারণ তৈরি হবে যাদের এক সময় কাস্টোমারে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।

বন্ধুগন, তাহলে ব্যাকলিংক কেন গুরত্বপূর্ণ আশা করি উপরের আলোচনা থেকে তার কিছু ধারণা পেয়েছেন। কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন।

Leave a Comment