ব্যাকলিংক কত প্রকার – কি কি? চলুন জেনে নেই!

ব্যাকলিংক কত প্রকার তা নিয়ে আজকের আলোচোনা। ব্যাকলিংক এর উপর একটি সংক্ষিপ্ত রিভিউ পোষ্টে  এ সম্পর্কে একটি ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। সেটি দেখে নিলে এই পোষ্ট এর বিষয়বস্তু আরও সহজে হৃদয়ঙ্গম করতে পারবেন।

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন জগতে ব্যাকলিংক খুব বেশী আলোচিত একটি বিষয়। একটি ভাল এবং অথারিটি সাইটে ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারলে গুগল তাকে খুব গুরত্ব দেয়।

আপনার সাইটে ভালো কনটেন্ট তৈরির পাশাপাশি সেই কনটেন্ট এর সাথে প্রাসঙ্গিক কোন সাইট থেকে ব্যাকলিংক তৈরি করা মুখ্য বিষয়। যা আপনার সাইট র‌্যাংকিং এর একটি গুরত্বপূর্ণ ক্রাইটেরিয়া হিসাবে গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনের নিকট বিবেচিত।

তবে, ব্যাকলিংক অনেক প্রকারের হতে পারে। অনেক প্রকার ব্যাকলিংক এর মাঝে গুগল এর নিকট কোন ধরণের ব্যাকলিংক পছন্দের আরে কোন ধরণের ব্যাকলিংক পছন্দের নয় – তা নিয়েও রয়েছে বিস্তর আলোচনা।

আমরা জানি গুগল নিয়মিতভাবে তার এলগরিদম হালনাগাদ করে থাকে। এজন্য, কিছুদিন আগেও যেটি ছিল হট কেক, আজ সেটি নাও থাকতে পারে।

যাহোক, অদ্যকার এ পোষ্টে ব্যাকলিংক কত প্রকার তা নিয়েই থাকবে আলোচনার মুল ফোকাস।

তো চলুন শুরু করা যাক।

ব্যাকলিংক কত প্রকার?

ব্যাকলিংক এর প্রকারভেদ আলোচনার পূর্বে আমি এর গুরত্ব নিয়ে দু’ একটি কথা বলি। গুগলের দু’জন ফাউন্ডার ১৯৯৬ সালে যখন তাদের প্রথম এলগরিদম লিখছিলেন। সেই এলগরিদম এই ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যে – যখন একটি ওয়েবসাইটের সাথে অপর কোন ওয়েবসাইটের লিংক থাকবে তখন এর দ্বারা ধরে নেওয়া হবে যে, ঐ ওয়েবসাইটটি উচু মানের একটি হাই অথারিটি বিশিষ্ট একটি সাইট।

এরপর গুগল তার এলগরিদম গত ২৬ বছরে কয়েক হাজার বার আপডেট করে। ২০১৯ সালের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, তখন পর্যন্ত গুগল ৩৬২০ বার তার এলগরিদম পরিবর্তন করেছে। যার মাধ্যমে গুগল গুগল এলগরিদম আরও উন্নত ও সমৃদ্ধ হয়েছে।

এমন পরিবর্তনের পরও দু’টি ওয়েবসাইটের মধ্যে লিংক বা ব্যাকলিংক এর গুরত্ব এখনোও রয়েই গেছে। গুগল এটিকে তার অন্যতম সেরা র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসাবে আজও বিবেচনা করছে।

তবে, শুধু ব্যাকলিংক হলেই হবেনা। তা হতে হবে মান সম্পন্ন এবং প্রাসঙ্গিক।

এজন্য, গুগল বিভিন্ন ব্যাকলিংক এর ধরণ প্রকাশ করেছে যা সার্চ ইঞ্জিনে ভালো অবস্থান পেতে সহায়তা করতে পারে।

তাই, ব্যাকলিংক কত প্রকার সেদিকে যাওয়ার আগে প্রথমে চলুন জেনে নেওয়া যাক কোন কোন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ব্যাকলিংক শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে।

ব্যাকলিংক শ্রেণীবিভাগের অনেক ক্রাইটেরিয়া রয়েছে। এদের মধ্যে প্রধান প্রধান যে সব বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ব্যাকলিংক এর প্রকারভেদ নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো নিম্নরুপ-

  • লিংক তৈরির কৌশল : যেমন ভাল কনটেন্ট তৈরি করে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে, গেষ্ট পোষ্ট এর মাধ্যমে, পেইড পোষ্ট ইত্যাদি ব্যবহার করে;
  • যে সাইটে ব্যাকলিংক তৈরি করা হবে তার মানের উপর: যেমন, অথারিটি সাইট, ট্রাফিক ভলিউম, ব্যাকলিংক এর প্রাসঙ্গিকতা;
  • লিংক এর অবস্থানের উপর: যেমন, কনটেক্সচুয়াল বা মেইন কনটেন্ট এর মাঝে, নেভিগেশন মেনুতে, সাইডবার ও ফুটার অঞ্চল থেকে, ইত্যাদি;
  • ব্যাকলিংক এর এট্রিবিউট বা ধরণের উপর: যেমন ডুফলো, নোফলো, স্পনসরড, ইউজার জেনারেটেড কনটেন্ট ইত্যাদি।

তবে, যেখান থেকেই ব্যাকলিংক তৈরি করুন না কেন এটি আপনার সাইটে কি পরিমান এসইও ভেল্যু প্রদান করছে সেটিই হবে ব্যাকলিংক তৈরির মুল বিবেচ্য বিষয়।

এই বিষয়টি মাথায় রেখেই ব্যাকলিংক কত প্রকার তা বিষয়ভিত্তিক অনুযায়ী নিচে উল্লেখ করছি-

ব্যাংলিংক এর ধরণ বা স্বভাব প্রকৃতির উপর ভিত্তি করে এটিকে নিম্নোক্ত দু’ভাগে ভাগ করা যায়, যথা- ডুফলো এবং নোফলো।

প্রথম প্রথম যখন এই বিষয়ে কাজ শুরু করবেন তখন এই দু’ধরণের ব্যাকলিংক এর কথা শুনে থাকবেন। আপনি কোন ওয়েব পেজ ভিজিট করার সময় সেখানে কোন লিংক দেখলে সেটি ডুফলো নাকি নোফলো তা বুঝার উপায় নাই। যতক্ষণ না আপনি ওয়েব পেজটির সোর্স কোডে প্রবেশ না করবেন।

সোর্স কোডে একটি সুনির্দিষ্ট ট্যাগ থাকে যা গুগলসহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনকে নির্দেশনা প্রদান করে এই মের্মে যে তারা ব্যাকলিংকটির সাথে কেমন আচরণ করবে।

ক) ডুফলো ব্যাকলিঙ্ক

এই ধরণের ব্যাকলিংক এর নাম একটু বেশী শোনা যায়। কারণ, এর এসইও ভেল্যু বেশী হওয়ার জন্য এটি মুল্যবান।

আপনি আপনার সাইটের জন্য কোন ওয়েবসাইটে যখন একটি ডুফলো ব্যাকলিংক তৈরি করবেন, এর অর্থ এই দ্বারায় যে, আপনি গুগলকে বলছেন যে লিংকটি অরগানিক। অর্থাৎ বিনা খরচে তৈরি করা হয়েছে।

ডুফলো লিংক সার্চ ইঞ্জিনকে আরোও বলে যে, এ লিংকের টার্গেট ওয়েবসাইটের কনটেন্ট প্রাসঙ্গিক এবং গুরত্বপূর্ণ। তাই, গুলল যেন সেই টার্গেট সাইটকে ফলো করে।

যেমন, এই লিংক টি  একটি ডুফলো ব্যাকলিংক, যার সোর্স কোড নিম্ন রুপ:

চিত্র:

চিত্রটি দেখে মনে হচ্ছে এটি যেন খুব সাধারণ একটি লিংক। ডুফলো লিংক সাধারণ হওয়ার ক্ষেত্রে এটিও একটি কারণ।

খ) নোফলো ব্যাকলিংক

এই ধরণের ব্যাকলিংক এর গুরত্ব কম। এরা সার্চ ইঞ্জিনকে বলে সে যেন এই লিংকটিকে অনুসরণ না করে।

এটির কোড ডুফলো লিংক এর মতই। তবে, একটি বড় পার্থক্য হলো, “rel=nofollow” এট্রিবিউট। যা ডুফলোর বেলায় থাকে না।

নোফলো লিংক এর এই রেল এট্রিবিউট সার্চ ইঞ্জিনকে এই বার্তা প্রদান করে যে সে যেন লিংকটিকে ফলো না করে।

চিত্র:

এখন,  ব্যাকলিংক কত প্রকার তা নিয়ে সামগ্রিকভাবে নিচে আলোচনা করব।

সামগ্রিকভাবে ব্যাকলিংক কত প্রকার?

১) এডিটরিয়াল ব্যাকলিংক

মানসম্পন্ন ব্যাকলিংক এর মধ্যে এটি এক প্রকারের ব্যাকলিংক। এটিকে আপনি গেস্ট পোষ্ট হিসাবেও  ধরতে পারেন। যা পাওয়া অনেকটা দুষ্কর বলা যেতে পারে। কেননা, এডিটরিয়াল সাইটগুলো খুব ভালো মানের অথারিটি সাইট নামে পরিচিত।

সাধারণত: সংবাদপত্র প্রচার করে এমন ওয়েবসাইট থেকে এ ধরণের ব্যাকলিংক তৈরি করতে হয়।

এর জন্য যা করতে হবে, আপনার নিশ এর সাথে সম্পর্ক রাখে এমন কোন টপিকস বেছে নিয়ে তার উপর খুব ভালো মানের একটি কনটেন্ট রচনা করতে হবে।  যা এডিটরিয়াল সাইট পাবলিশ করার জন্য উপযুক্ত মনে করবে।

২) গেষ্ট পোষ্টিং

গেষ্ট পোষ্টিং এর মাধ্যমেও আপনি উচু মানের ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারেন। গুগল এখনোও এটিকে পছন্দ করে। এই প্রক্রিয়ায় আপনি অথারিটি সাইট থেকে ব্যাকলিংক পেতে পারেন যা লিংক জুস দিয়ে পরিপূর্ণ থাকে।

তবে, গেষ্ট পোষ্টিং এর ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে-

  • যে সাইটে গেষ্ট হিসাবে পোষ্ট করবেন তার থাকতে হবে শক্তিশালী একটি লিংক প্রোফাইল।
  • গেষ্ট পোষ্টিং সাইট যেন আপনার নিশ এর সাথে সম্পর্কিত থাকে।
  • শুধুমাত্র হাই কোয়ালিটি কনটেন্ট উপস্থাপনের চেষ্টা করতে হবে।
  • বিনিময়ে অথার বায়ো ছাড়া কনটেন্ট এর মাঝেও পাবেন ডুফলো ব্যাকলিংক।

এজন্য, উপরে উল্লেখিত বৈশিষ্টের সাথে মিল রেখে কোন গেষ্ট পোষ্টিং সাইট খুঁজে নেওয়ার পর সেই সাইটের মালিকের সাথে যোগযোগ করতে হবে যাতে আপনার লেখাটি গ্রহণ করে।

৩) ডিরেক্টরি লিষ্টিং ব্যাকলিংক

এ ধরণের লিংক সহজে পাওয়া যায়। তাই, এক্ষেত্রে স্প্যামিং এর রয়েছে বিপুল সম্ভাবনা। কাজেই, লিংক তৈরির সময় ডিরেক্টরি সাইটের স্প্যাম স্কোর কত তা বের করে নিবেন। স্প্যাম স্কোর ৫ এর কম হলে এবং সাইটের ডোমেইন অথারিটি ভাল থাকলে কেবল মাত্র ঐ সব সাইট থেকে ব্যাকলিংক নেওয়ার চেষ্টা করবেন। অন্যথায়, লাভের পরিবর্তে ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হবে।

এজন্য, আপনাকে সার্চ ইঞ্জিন বান্ধব ডিরেক্টরি সাইট ব্যবহার করতে হবে।

উদাহারণ স্বরুপ নিচে কয়েকটির নাম বলছি-

  • গুগল মাই বিজিনেস
  • বিং প্লেস ফর বিজিনেস
  • ইয়াহু লোকাল ওয়ার্কস

এছাড়াও রয়েছে-

  • ইয়েল্প
  • ইয়েলো পেজ
  • এবাউট আস; ইত্যাদি

৪) প্রেস রিলিজ

৫) কনটেক্সচুয়াল ব্যাকলিংক

৬) Quora বা reddit থেকে ব্যাকলিংক

৭) সোশাল প্রোফাইল ব্যাকলিংক

৮) ইমেজ বা ইফোগ্রাফিক ব্যাকলিংক

৯) পডকাস্ট ব্যাকলিংক

বন্ধুগন – ব্যাকলিংক কত প্রকার – কি কি শীর্ষক আলোচ্য পোষ্টের উপস্থাপিত তথ্যের উপর কোন প্রশ্ন থাকলে কমেন্টের মাধ্যমে জানানোর অনুরোধ করছি।

Leave a Comment