ডোমেইন অথারিটি কি – বিষয়টির উপর কিছু তথ্য নিয়ে হাজির হলাম। এটি বর্তমান সময়ে এসইও জগতের খুব পরিচিত একটি নাম। একসময় কোন ওয়েবসাইটের এসইও মান বুঝার জন্য প্যাজ র্যাংক শব্দটির নাম শুনা যেত। এখন তার জায়গায় ওয়েবসাইট অথারিটি বা পেজ অথারিটি শব্দদ্বয়ের ব্যবহার হতে দেখা যায়।
তবে, প্যাজ র্যাংক বিষয়টি গুগল কর্তৃক স্বীকৃত একটি এসইও মেট্রিক্স ছিল কিন্তু ডোমেইন বা পেজ অথারিটির বেলায় তা নয়। এটি হল থার্ড পার্টি কর্তৃক নির্ণীত একটি মেট্রিক্স।
কিন্তু এই মেট্রিক্স এর দ্বারা আসলে কি বুঝায়? আপনার সাইট র্যাংকিং এর জন্য এটি কি সত্যিই দরকারি?
এসব প্রশ্নের উত্তর এই পোষ্টে খুঁজে পাবেন। তার আগে ডোমেইন বা ওয়েবসাইট অথারিটি কি এবং এর কিছু আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে কিছু তথ্য পেশ করব।
Table of Contents
ডোমেইন অথারিটি কি?
ডোমেইন অথারিটির অপর নাম ওয়েবসাইট অথারিটি। ডোমেইন অথারিটি কি – এর সহজ উত্তর হল, এর মাধ্যমে কোন ডোমেইন কতটুকু শক্তিশালী তা বুঝানো হয়।
ডোমেইন অথারিটির দ্বারা কোন থার্ড পার্টির নির্ণয় করা মান বুঝায় না। কারণ, এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্বীকৃত কোন মানদন্ড নেই। তবে, থার্ড পার্টির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় moz, ahrefs, semrush ইত্যাদি কম্পানি তাদের নিজস্ব মাপকাঠি দিয়ে এটি নির্ণয় করে থাকে।
যেমন, moz এর ক্ষেত্রে এর নাম ডোমেইন অথারিটি (DA)। আবার ahref এর বেলায় একে বলা হয় ডোমেইন রেটিং (DR)
ডোমেইন বা ওয়েবসাইট অথারিটি কি – সাধারণ অর্থে এর উত্তর উক্ত ডোমেইনের এসইও প্রোফাইলের শক্তিমত্তাকে নির্দেশ করে। একটি ওয়েবসাইটের ডোমেইন অথারিটি যত বেশী হবে এর সার্বিক এসইও প্রোফাইল বা ব্যাকলিংক ততটা শক্তিশালি হবে।
ডোমেইন বা ওয়েবসাইট অথারিটির মান সাধারণত: ১ থেকে ১০০ এর মধ্যে হয়ে থাকে।
আপনার ওয়েবসাইটের এসইও কৌশল নির্ধারণের জন্য ডোমেইন অথারিটি কি এবং কি নয় সে সম্পর্কে একটি পরিস্কার ধারণা নিতে হবে।
যেহেতু, ডোমেইন অথারিটি এসইও কাজ তথা মান সম্পন্ন ব্যাকলিংক তৈরির উপর নির্ভর করে, তাই সার্চ ইঞ্চিনে আপনার সাইট র্যাংকিং এর জন্য এর ভূমিকা রয়েছে বলে অনেকে মনে করে।
তবে, বলে রাখা ভাল, সার্চ ইঞ্জিনে কোন ওয়েবসাইটের র্যাংকিং এর জন্য গুগল এটিকে অপরিহার্য র্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসাবে বিবেচনা করে না। কাজেই, ডোমেইন অথারিটি এমন কোন বিষয় নয় যা আপনার সাইটকে র্যাংকিং করানোর জন্য কাজ করবে।
তবে, ইহা আপনার প্রতিযোগী ওয়েবসাইটের তুলনায় আপনার সাইটের কার্যকারিতার উপর ভাল একটি সম্ভাবনা নির্দেশ করে।
ডোমেইন অথারিটি কতটা গুরত্বপূর্ণ?
ডোমেইন অথারিটি বিষয়ে ইতোমধ্যেই বলা হয়েছে যে, এটি গুগলের নিজস্ব বা গুগল কর্তৃক ঘোষিত কোন স্বীকৃত মেট্রিক্স নয়। কাজেই, আপনার ওয়েবসাইটের র্যাংকিং ক্রাইটেরিয়া হিসাবে এটিকে একমাত্র অবলম্বন হিসাবে ধরে নিবেন না।
কেউ কেউ এটি প্যাজ র্যাংক এর বিকল্প হিসাবে মনে করে। এটি ভুল ধারণা। মনে রাখতে হবে, ডোমেইন অথারিটি নামের এই শব্দটি গুগল থেকে আসেনি।
এখানে ডোমেইন কথাটির সাথে অথারিটি নামের শব্দটি যোগ হওয়ায় অনেকেই বিভ্রান্তের স্বীকার হয়। আর এই সুযোগে থার্ড পার্টি কম্পানিগুলো তাদের মার্কেটিং এর একটি কৌশল হিসাবে নিয়ে নেয়।
গুগলের John Mueller বলেই ফেলেছেন, ডোমেইন অথারিটি Moz নামের কম্পানির একটি এসইও টুল।
সার্চ ইঞ্জিন জার্নালে প্রকাশিত এক আর্টিকেলে দেখা যায়, পাঁচটি এমন ওয়েবসাইট খুঁজে পাওয়া গিয়েছে যারা সার্চ ইঞ্জিনে প্রথম ৩০ অবস্থানে র্যাংক করেছে সুনির্দিষ্ট কোন কিওয়ার্ডের বিপরীতে।
এর কারণ হিসাবে, দেখা যায় ঐ সাইটগুলো কনটেন্টের ভিতর কিওয়ার্ড যথাযথ ও সুন্দরভাবে বসিয়েছে। কিন্তু ডোমেইন অথারিটি নামের মেট্রিক্স এর সাথে তার কোন যোগসুত্র খুঁজে পাওয়া যায়নি।
কাজেই, বার্তা হল এটাই যে, আপনি কোন সাইটকে শুধু তার ডোমেইন বা পেজ অথারিটির মেট্রিক্স এর দ্বারা বিচার করতে পারেন না।
ডোমেইন অথারিটি ও পেজ অথারিটির মধ্যে পার্থক্য কি?
ডোমেইন বা ওয়েবসাইট অথারিটি সম্পূর্ন ওয়েবসাইটের একটি সার্বিক শক্তিমত্তা প্রকাশ করে এই মর্মে যে ইহা কত সহজে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজ এ তার একটি অবস্থান দখলে নিতে পারে।
অপরদিকে, পেজ অথারিটি ঐ ওয়েবসাইটের প্রত্যেক পেজ এর সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংকিং এর ক্ষেত্রে কতটুকু সম্ভাবনা থাকে তা নির্দেশ করে। এটি কোন ওয়েবসাইটের একক কোন পেজ এর শক্তিমত্তা নির্দেশ করে। যেমন, কোন ব্লগ পোষ্ট বা প্রোডাক্টের কোন পোষ্ট।
ডোমেইন অথারিটি কিভাবে তৈরি হয়?
আপনার ওয়েবসাইটের সাথে সম্পর্কিত মানসম্পন্ন ব্যাকলিংক তৈরির মাধ্যমে আপনি ডোমেইন বা ওয়েবসাইট অথারিটি বৃদ্ধি করতে পারেন। এছাড়া নিচে আরোও কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হল-
- ব্যাকলিংক তৈরির ক্ষেত্রে সবসময় ব্যাকলিংক এর সংখ্যার দিকে না তাকিয়ে এর মানের দিকে তাকাতে হবে।
- Do follow ব্যাকলিংক তৈরির দিকে মনযোগী হতে হবে।
- আপনার সাইটে ভাল মানের কনটেন্ট তৈরি করুন। মনে রাখতে হবে, “content is king”.
- আপনার সাইটের যারা মুল অডিয়েন্স তাদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে কনটেন্ট তৈরি করুন। এর ফলে তা ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
- আপনার সাইটের পুরাতন কনটেন্টসমুহ নিয়মিত আপডেট করে চলুন। আপনার সাইটের যে সব পেজ এর অথারিটি স্কোর খারাপ ঐ সব পেজ-এ নতুন কোন তথ্যবহুল কনটেন্ট যোগ করুন যাতে তা ইউজার এর নিকট পছন্দনীয় হয়।
- আপনার প্রতিযোগী ওয়েবসাইটের দিকে দৃষ্টি রাখুন এবং তাদের সাথে আপনার কনটেন্টের তুলনামুলক একটি চিত্র ধারণ করে সে অনুযায়ি আপনার কনটেন্ট সমৃদ্ধ করতে থাকুন।
- লক্ষ রাখুন আপনার প্রতিযোগী ওয়েবসাইট কোন কোন ওয়েবসাইট থেকে ব্যাকলিংক তৈরি করেছে। আপনিও সেভাবে চেষ্টা করে দেখুন।
- আপনার কনটেন্ট বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্যান্য চ্যানেলে প্রোমোট করতে থাকুন।
উপরের আলোচনায় এতটুকু পরিস্কার যে, কোন ওয়েবসাইটের ডোমেইন বা পেজ অথারিটি তৈরি করা বা বৃদ্ধি করা একটি দীর্ঘমেয়াদি চেষ্টার ফসল।
পরিশেষে, গুরত্বপূর্ণ আর একটি কথা বলার প্রয়োজন অনুভব করছি, তা হল- গুগল এর র্যাংকিং ফ্যাক্টর বিবেচনায় রেখে থার্ড পার্টি সাইটগুলো প্রতিনিয়ত তাদের ডোমেইন অথারিটি বা অন্য নামেরে এই মেট্রিক্স এর এলগরিদম আপডেট করে চলছে।
এজন্য, আপনিও মাঝে মাঝে আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন ও পেজ অথারিটি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন।
বন্ধুগন, ডোমেইন বা ওয়েবসাইট অথারিটি কি – বিষয়টির উপর আমার দেওয়া তথ্যের উপর যদি আপনাদের কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। ধন্যবাদ।