আপনি কি এসইও কাজ নিয়ে শুধু এই তিনটি বিষয়ের উপরেই সন্তুষ্ট রয়েছেন? যেমন- কিওয়ার্ড রিসার্চ, প্লাগইন এর সাহায্যে অন-পেজ অপটিমাইজ এবং কিছু ব্যাকলিংক করিয়ে নেয়া।
যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে গুরত্বপূর্ণ আর একটি অংশ থেকে বঞ্চিত আছেন। সেটি হলো টেকনিক্যাল এসইও।
সার্চ ইঞ্জিনে আপনার সাইট দৃশ্যমান করাতে চাইলে এই তিনটি বিষয় ছাড়াও টেকনিক্যাল এসইও এর প্রতি মনযোগী হতে হবে। কারণ, বর্তমানে এর গুরত্ব অনেকটাই বেড়ে গেছে।
আজকের পোষ্টে টেকনিক্যাল এসইও কি এবং কেন এর প্রয়োজন রয়েছে তা নিয়ে কিছু আলোচনা করব।
টেকনিক্যাল এসইও কি?
এটি বলতে বুঝায় কোন ওয়েবসাইট এবং তার ওয়েব সার্ভারকে অপটিমাইজ করা। যাতে সার্চ ইঞ্জিনের স্পাইডার খুব সুন্দরভাবে তাকে ক্রাউল করতে পারে এবং ওয়েবসাইটি সার্চ ইঞ্জিনে সহজে ও দ্রুত ইনডেক্স হতে পারে।
টেকনিক্যাল এসইও অন পেজ এসইও এর অংশ। এটি দ্বার ওয়েবসাইটের টেকনিক্যাল বিষয়সমূহ বুঝানো হয় যা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আপনার সাইট র্যাংকিং এর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
এটি করার ফলে ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড বেড়ে যায়, সার্চ ইঞ্জিন ক্রাউলার এর পক্ষে সহজে ক্রাউলিং কাজটি সেরে নেয়া যায় এবং সার্বিকভাবে গোটা ওয়েবসাইট টি সার্চ ইঞ্জিনের নিকট অধিক বোধগম্য হয়ে যায়।
টেকনিক্যাল এসইও হচ্ছে অন-পেজ এসইও এর একটি অংশ। ইহা ওয়েবসাইটের বিভিন্ন উপাদান সমূহকে ফোকাস করে। যাতে সার্চ ইঞ্জিনের রেজাল্ট পেজ -এ সেই ওয়েবসাইটের র্যাংক করার সুযোগ বেড়ে যায়।
অপরদিকে, অফ-পেজ এসইও এর দ্বারা সাধারণত: বাহ্যিক বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে কোন ওয়েবসাইটকে প্রোমোট করা হয়। যা টেকনিক্যাল এসইও এর ধারণার বিপরীত – বলা যেতে পারে।
টেকনিক্যাল এসইও কেন গুরত্বপূর্ণ?
ধরুন, আপনি অনেক কষ্ট করে খুব সুন্দর এবং তথ্যবহুল একটি পোষ্ট রচনা করেছেন আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে প্রকাশের জন্য। এমন একটি কনটেন্ট লিখেছেন যা পড়ে পাঠকগন কাস্টোমারে পরিণত হয়ে যাবে। অর্থাৎ, ভালো সংখ্যায় একটি কনভার্শন হবে।
কিন্তু, আপনার সেই কনটেন্ট সম্পর্কিত কিওয়ার্ড গুগলে লিখে সার্চ করলে গুগল যদি তাকে চিনতে না পারে; তখন আপনার প্রায় সব পরিশ্রম বেকার হয়ে গেল।
আর এই সমস্য দুর করার ক্ষেত্রে আপনার জন্য রয়েছে টেকনিক্যাল এসইও।
গুগল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন চায় ইউজারগন যাতে তাদের কিওয়ার্ডের বিপরীতে সার্চ করার পর সবচেয়ে ভালো সার্চ রেজাল্ট পায়। আর এজন্যই, গুগলের ক্রাউলার প্রতিটি ওয়েবপেজ খুব গুরত্বসহকারে বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর মাথায় রেখে রিভিউ করে।
এর মধ্যে প্রধান একটি ফ্যাক্টর হলো ইউজার এক্সপেরিয়েন্স। মানে, আপনার সেই উচ্চ মানের কনটেন্ট দেখার উদ্দেশ্যে সাইটে প্রবেশের সময় পাঠককে কোন বিরুপ পরিস্থিতির স্বীকার হতে হয়েছিল কিনা।
যদি, তা না হয়ে হয়ে থাকে, তাহলে বুঝা যাবে, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ভাল।
বিরুপ পরিস্থিতির একটি উদাহরণ হতে পারে, আপনার সাইটে প্রবেশের সময় ব্রাউজারে তা লোড হতে কেমন সময় লাগে অথাৎ সাইটের লোডিং স্পিড কেমন। যদি ইউজার এর ব্রাউজারে লোড হতে ৩ সেকেন্ডের বেশী সময় লাগে, তখন বেশীরভাগ ক্ষেত্রে ইউজার এর ধৈর্যের বাধ ভেঙে গিয়ে সে আপনাকে পরিত্যাগ করতে উদ্যত হবে।
ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ভালো রাখার জন্য সার্চ ইঞ্জিন তার রেজাল্ট পেজ প্রদর্শনের সময় অন্যান্য যে বিষয়গুলো বিবেচনায় নেয় তার মধ্যে আর একটি ফ্যাক্টর হলো আপনার সাইটের ওয়েবপেজ সমূহে স্ট্রাকচার ডাটা রয়েছে কিনা। যার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনের রবটকে ওয়েবপেজটি কোন বিষয়ের উপর তৈরি করা হয়েছে তার উপর বার্তা প্রদান করা হয়।
কাজেই, আপনার ওয়েবসাইটের এসব টেকনিক্যাল বিষয়াদি সঠিক ভাবে প্রয়োগ করার অর্থই হলো সার্চ ইঞ্জিনকে সাহায্য করা যাতে সে ক্রাউল করার পর আপনার সাইটকে ভালোভাবে বুঝতে পারে।
তা যদি আপনি নিশ্চিত করতে পারেন, তাহলে আপনি গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংকিং এর ক্ষেত্রে সুন্দর একটি অবস্থান আশা করতে পারবেন।
আপনি টেকনিক্যাল এসইও উন্নতি করতে পারলে সার্চ ইঞ্জিন এবং ইউজার উভয়েই আপনার সাইটের উপর খুশি থাকবে।
বিভিন্ন ধরণের এসইও কিভাবে পার্থক্য করবেন?
অনেকেই সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এর তিন ভাবে শ্রেণিবিভাগা করে। যেমন, অনপেজ-এসইও, অফ-পেজ এসইও এবং টেকনিক্যাল এসইও। চলুন দেখে নেই এদর মাঝে পার্থক্য কেমন-
যে এসইও আপনার ওয়েবসাইটের যে কোন পেজ তৈরির সময় ব্যবহৃত হয় তাকে অন-পেজ এসইও বলে। এ ধরণের এসইও এর মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন এবং পাঠক উভয়েই এই মর্মে বার্তা পায় যে, ওয়েব পেজটি কোন বিষয়ের উপর, সেখানে কি কি কিওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়েছে, তার মেটা ডেস্ক্রিপশন, হেডার ট্যাগ, ইন্টারনাল লিংকিং – ইত্যাদি।
একজন ব্লগার বা ইন্টারনেট মার্কেটার হিসাবে, অনপেজ এসইও তে আপনার সবচেয়ে বেশী নিয়ন্ত্রণ থাকবে। নিজের মত করে আপনি অপটিমাইজ করে নিতে পারবেন।
অফ-পেজ এসইও
আপনার ওয়েবপেজ এর জনপ্রিয়তা কেমন সে বিষয়ে সার্চ ইঞ্জিন এ ধরণের এসইও এর মাধ্যমে বুঝতে পারে। জনপ্রিয়তার মাপকাঠি হচ্ছে আস্থা ভোট যা আপনার কনটেন্ট এর সাথে প্রাসঙ্গিক অন্য কোন সাইটে ব্যাকলিংক তৈরির মাধ্যমে পেতে হয়।
ব্যাকলিংক এর মান এবং সংখ্যা উভয়ের উপর নির্ভর করবে আপনার সাইটের ডোমেইন অথারিটি বা পেজ অথারিটি যা পূর্বে প্যাজ র্যাংক নামে পরিচিত ছিল।
এর হিসাব অনেকটা এমন – কোন ওয়েব পেজ যার ১০০ টি ব্যাকলিংক থাকবে তা ঐ পেজকে সার্চ ইঞ্জিনে র্যাংকিং এর সময় পরাজিত করবে যার লিংক এর সংখ্যা ৫০ টি।
তবে, উভয় ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, ব্যাংকলিংক হতে হবে আপনার সাইটের সাথে প্রাসঙ্গিক কোন অথারিটি বা নির্ভরযোগ্য সাইট হতে।
টেকনিক্যাল এসইও
অনপেজ এসইও এর মত এখানেও আপনার নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ থাকবে। তবে, বিষয়টি অপর দুই ধরণের এসইও এর চেয়ে কিছুটা কঠিন। কারণ এখানে আপনার কিছু টেকনিক্যাল জ্ঞান থাকতে হবে।